December 22, 2024, 8:01 am
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
নানা অনিয়ম ও মাদক গ্রহনের অভিযোগে অভিযুক্ত কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আব্দুল কাইয়ুম খানের পদাবনতি করা হয়েছে। একই সাথে তাকে মিরপুর থেকে রাঙ্গামাটির বরকল উপজেলায় বদলি করা হয়েছে।
পাশাপাশি মাদক গ্রহণের অভিযোগ থাকায় এক সপ্তাহের মধ্যে বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্টের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে বদলির পর গত ২৮ অক্টোবর কাইয়ুমকে মিরপুর থেকে রিলিজ করা হলেও নতুন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়েই তিনি চলে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগের মধ্যে মিরপুর উপজেলার ২৬টি সেতুর দরপত্রে অনিয়ম অন্যতম। জানা যায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মিরপুর উপজেলায় গ্রামীণ রাস্তায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য সম্পন্ন কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পে ২৬টি সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। গত ২০ জুন একদিনেই সব দরপত্র বিক্রি শেষ দেখানো হয়। পিআইও আব্দুল কাইয়ুমের যোগসাজশে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা সাধারণ ঠিকাদারদের বঞ্চিত করে নিজেরাই সব কাজ ভাগাভাগি করে নেয়। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় তিন কার্যদিবসের মধ্যে চিঠির জবাব দিতে প্রকল্পের পিডি যুগ্ম সচিব আবু বকর সিদ্দিক পিআইওকে ২৩ জুন চিঠি দেন।
পরে অধিকতর তদন্ত করতে ৮ জুলাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর থেকে যুগ্ম সচিবকে প্রধান করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এম খালিদ মাহমুদ, সদস্য ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের পরিচালক (উপসচিব) মাহবুব আলম তালুকদার। ওইদিন রাতেই তারা তদন্তে কুষ্টিয়ার মিরপুরে আসেন। তারা সরেজমিনে এসে কাইয়ুমের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পান। তার মাদক গ্রহণের বিষয়টিও জানতে পারেন।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের একটি দল কাইয়ুমের সময় বরাদ্দকৃত টিআর, কাবিখাসহ বিভিন্ন প্রকল্পে বড় ধরনের অনিয়ম দেখতে পান। তিনি নিয়মিত অফিস করেন না বলেও অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। নিয়মিত অফিস করার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জেলা প্রশাসন থেকে বারবার তাগাদা দিলেও তিনি কর্ণপাত না করে স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যেতে থাকেন।
মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিংকন বিশ্বাস জানান কাইয়ুমকে বদলি করা হয়েছে। এ ছাড়া তাকে পদাবনতি দিয়ে মাদক সেবনের বিষয়টি পরীক্ষা করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইউএনও জানান তিনি সম্ভবত নতুন কর্মস্থলে চলে গেছেন।
কুষ্টিয়া জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন, আব্দুল কাইয়ুমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাকে বদলি করা হয়েছে। বিভাগীয় কি ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে সেটা কতৃপক্ষ নির্ধারণ করবে।
Leave a Reply